কমিক্‌স সম্ভার — তিয়ুদাদ ~ ওয়াচমেন ~ ফ্যান্টম ~ টিনটিন ~ কুইক ও ফ্লাপকে ~ পেপি ~ ব্যাটম্যান ~ সুপারম্যান ~ হাল্ক ~ জেমস বন্ড ~ ডেথ নোট ~ মিলো মানারা ~ দ্য মমি ~ দ্য থিং ~ ব্লেয়ার উইচ ~ আগাথা ক্রিস্টি ~ এডগার অ্যালান পো

Wednesday, September 18, 2019

Watchmen by Alan Moore & Dave Gibbons (Translated in Bengali)

ওয়াচমেন (১ম অধ্যায়) —অ্যালান মুর ও ডেভ গিবন্‌স

ওয়াচমেনের নাম করলেই প্রথম যে নামটা মাথায় ভেসে আসে, তিনি হলেন অ্যালান মুর। ফ্রাঙ্ক মিলারের ভক্তদের একটু রাগিয়েই বলছি, আমার কাছে মুর শুধুমাত্র গল্প লিখেও মিলারের থেকে অনেক এগিয়ে— যেখানে মিলার গল্পের সাথে সাথে ছবিও আঁকেন। যাকগে, “মুর না মিলার, কে বড়?” তা নিয়ে তর্ক বাঁধিয়ে লাভ নেই, তবে আমি যে মুরের ভক্ত সেই রহস্য ভেদ করার জন্য কোনও পুরস্কার নেই! মুরের আমি প্রথম যে কাজটা দেখি সেটা হল “দ্য কিলিং জোক”— এই বিশেষ কমিক্‌সটা নিয়ে আমি আর বেশি কথা বাড়াতে চাই না, কেননা এর সাথে এক “হৃদয়বিদারক স্মৃতি” (এক বিশেষ জনকে উদ্দেশ্য করে বলছি, আমি কিন্তু কিছুই বলিনি!) জড়িয়ে আছে! তা, এই “কিলিং জোক” পড়ে আমি তো “কিলিং” হয়ে পড়েছিলাম, তারপরই মুরের সব কাজ চাক্ষুষ করার ‘লোভটা’ জেগে ওঠে। বেশ ভালই চলছিল, কিন্তু চলতি বছরের জুলাই মাস নাগাদ একটা মুষড়ে পড়া খবরে চোখ পড়ে—যে অ্যালান মুর নাকি লেখালেখি থেকে অবসর নিচ্ছেন! ভক্তরা সবসময়ই তাদের ভালবাসার লোককে তাঁদের সৃষ্টির মধ্যে দেখতে পছন্দ করে, মনে মনে মুরের ফিরে আসার বাসনা নিয়েও বলছি—উনি একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—“মুরের লেখনীর আর সেই ধার নেই” শোনার থেকে “মুরের থেকে আরও অসাধারণ কাজ আমরা পেতে পারতাম” শোনা অনেক ভাল! ধন্যবাদ, অ্যালান মুর, এত বছর ধরে আমাদের এত দারুণ দারুণ কাজ উপহার দেওয়ার জন্য!

গল্পকার অ্যালান মুর
অঙ্কন-শিল্পী ডেভ গিবন্‌স

এবার ওয়াচমেনের বাংলা অনুবাদের প্রসঙ্গে আসি— ওয়াচমেন অনেক দিন থেকেই বাংলায় করার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু ঠিক সাহস পাচ্ছিলাম না, কেননা ওয়াচমেনে এত রেফারেন্সের ছড়াছড়ি যে ভাবানুবাদ তো দূর, আক্ষরিক অনুবাদ করতে গেলেও দাঁত (পড়ুন কী-বোর্ড) ভেঙে যাওয়ার জোগাড় হয়! চলতি বছরের গোড়ার দিকে কলেজ স্ট্রিটের আড্ডায় “চিত্রচোর” রূপক ঘোষ এরপরে কীসে হাত দেওয়া হবে জিজ্ঞেস করাতে সাতপাঁচ না ভেবে ওয়াচমেন বলে দিই, শুনে ও বলে যে ওরও নাকি ওয়াচমেন করার ইচ্ছে ছিল, না-করার কারণগুলো প্রায় একই (সময়, সাহস)। এরপরেই ও ওয়াচমেনের প্রচ্ছদ করার প্রস্তাব দেয় (প্রস্তাবটা অবশ্য ওয়াচমেনে হাত দেওয়ার পর পাকাপাকি হয়), যেটা শুনে মনে মনে দু’হাত তুলে নেচে উঠেছিলাম— “হুঁ, হুঁ, বাওয়া! এত দিনে একটা ‘শোধ’ তোলা গেছে!” তা অনুবাদে হাত দিয়ে দাঁত / কী-বোর্ড সবই ভাঙচুর হয়, সবথেকে যেটা বেশি হয়েছে সেটা হল অনুবাদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর গ্রাফিতি, পোস্টার, ওনোম্যাটোপিয়া (এই পর্বে অবশ্য এই জিনিসটির অনুপস্থিতিটাই বেশি চোখে পড়বে), এসব বাংলায় রূপান্তরিত করা হবে কিনা ভেবে-ভেবে। পরে অবশ্য সে-দ্বন্দ্বযুদ্ধের পাঁকে পড়ে বারবার অনেক কিছুরই পরিবর্তন করতে হয়েছে। অনুবাদে হাত দেওয়ার পর নমুনা হিসেবে কমিক্‌স-বন্ধু / সিনিয়রদের এক-দু’পাতা দেখানোয় ইন্দ্রনীল কাঞ্জিলাল দা’ নিজে থেকেই প্রুফ-রিডারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন (আর আমিও হাঁফ ছেড়ে বাঁচি!)। এবার নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পারছেন ওয়াচমেন বাংলায় ‘তৈরি’ করতে এতটা সময় কেন লেগেছে। বাদবাকিটা এবার আপনাদের হাতে, পড়ে আপনাদের ভাল লাগলে আমাদের এই পরিশ্রম সার্থক বলে মনে করব। আর হ্যাঁ, মাতৃভাষায় আরও বেশি বেশি করে কমিক্‌স পড়ুন ও পড়ান। আজ এখানেই শেষ করছি তাহলে, ভাল থাকবেন, পাশে থাকবেন!


ওয়াচমেন: মূল কাহিনী অ্যালান মুর। আঁকা ডেভ গিবন্‌স। রঙ জন হিগিন্‌স। প্রথম প্রকাশ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৬

কাহিনী ও অঙ্কনের মেলবন্ধন

বাংলা সংস্করণের পরিকল্পনা, অনুবাদ, বর্ণসংস্থাপন ও সম্পাদনা
 দেবাশীষ কর্মকার। বর্ণ, শব্দ ও বাক্য পরিমার্জনা ইন্দ্রনীল কাঞ্জিলাল। প্রচ্ছদ রূপান্তর রূপক ঘোষ

মূল এবং রূপান্তরিত প্রচ্ছদ